স্বদেশ ডেস্ক:
ই-কমার্সে গ্রাহকদের লোভ কমাতে জনস্বার্থে প্রচারণা চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সাথে ই-কমার্সের নামে প্রতারণা রোধে মানুষকে সচেতন করার কথাও বলেছেন আদালত।
রোববার ফোনে আড়িপাতা বন্ধ চেয়ে করা রিটের শুনানিতে দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মুস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই পরামর্শ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
ফোনে আড়িপাতা বন্ধে রিটের শুনানিতে আইনজীবী শিশির মনিরের কাছে ই-কমার্স বিষয়ে জানতে চান হাইকোর্ট। তখন শিশির মনির বলেন, আমাদের দেশে ই-কমার্স ব্যবসার নামে অনেক বেশি ফ্রি অফার থাকে, যা বিদেশি প্রতিষ্ঠান আলিবাবা, অ্যামাজনে থাকে না। আমাদের দেশের গ্রাহকরা অতি লোভে পড়ে প্রতারণার শিকার হন।
তখন আদালত বলেন, ‘হ্যাঁ আমরা তো দেখি, একটা কিনলে আরেকটা ফ্রি। বিমানের টিকিট কিনলে হোটেল ফ্রি। আপনারা তো পাবলিক ইন্টারেস্টের মামলা করেন। আপনাদের উচিত পাবলিকদের সচেতন করা, তারা যেন এক্ষেত্রে লোভ কমান।’
আইনজীবী শিশির মনির আদালতকে বলেন, আমাদের দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিষয়টা এমন যে, প্রথমে তারা অফার দেবে- একটা মোটরসাইকেলের টাকায় দুইটা মোটরসাইকেল। এরপর গ্রাহকরা টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল পাবে এবং টাকাটা বাংলাদেশ ব্যাংকের গেটওয়ে দিয়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে চলে যাবে। এরপর আবার দুইটা কিনলে আরো দুইটা ফ্রি, চারটা কিনলে আরো চারটা ফ্রি পাবে এমন অফার আসে।
তিনি আরো বলেন, কিন্তু এক পর্যায়ে যখন গ্রাহক অধিকসংখ্যক যেমন- আটটা মোটরসাইকেল কিনলে আরো আটটা মোটরসাইকেল পাওয়ার জন্য টাকা দেয় তখন সে টাকা চলে যায়, কিন্তু মোটরসাইকেল আর আসে না।
পরে ফোনে আড়িপাতা বন্ধে ও ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনার তদন্ত চেয়ে করা রিটের আদেশের জন্য আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।
আদালতে এদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
পরে শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, আড়িপাতা ও ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় রিটের শুনানিতে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, দেশের মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছে বেশকিছু ই-কমার্স মার্কেট থেকে। তখন ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জ নিয়ে কথা উঠলে আদালত জনগণকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন।